এই প্রবন্ধটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি ও সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ এর একটি সেমিনার পেপার থেকে নেয়া অংশবিশেষ মাত্র তবে সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স থেকে এ বিষয়ে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই গবেষণা পত্রটি প্রকাশ করা হবে।
ভূমিকা: সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশে গভর্নেন্স বিষয়ে নানা চিন্তা ভাবনা এবং সরকারী পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জনপ্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, গণমাধ্যম, এনজিওসহ বেশ কিছু বিষয়ে গভর্নেন্সের ইম্প্রুভমেন্টের জন্য সরকারের তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। আমাদের কাস্টম হাউসের
অটোমেশন বাংলাদেশের গভর্নেন্স ইম্প্রুভমেন্টের একটি ছোট উদাহরণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন অটোমেশন প্রকল্প এবং বর্তমান গভর্নরের ভিশন এবং ত্বরিত কার্য ক্ষমতা নিঃসন্দেহে আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর স্বাক্ষর বহন করে। এগুলো সবই আশার আলো। কিন্তু অন্ধকারের দিকও রয়েছে।
মার্কেট গভর্নেন্স: আমাদের মার্কেট গভর্নেন্সের ব্যর্থতা এই দুর্বল দিকগুলোর অন্যতম। বাজারের উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকাটা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে কাম্য না হলেও একটি সুন্দর বাজার ব্যবস্থাপনা সৃষ্টির দায়িত্ব সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না। বিগত দশকগুলোতে এটাই মনে হয়েছে যে বাজার সম্বন্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের খোঁজ খবর কম। যথেষ্ট পরিমাণ বাজার তথ্যের অভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অনেক ক্ষেত্রে কনজিউমার কমডিটির বিষয়ে চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্য মূলক নীতি নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। দক্ষ মার্কেট গভর্নেন্স নিশ্চিত করার জন্য একটি কার্যকর মার্কেট ইনফরমেশন সিস্টেম প্রবর্তন করা অর্থ্যাৎ এম.আই.এস. চালু করা এখন খুবই জরুরী। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় আমদানী ও শিল্পায়নের মাধ্যমে যে সব পণ্য বাজারে আসছে সেটা একটি তথ্য নির্ভর ব্যবস্থার মাধ্যমে আসছে না। ফলশ্রুতিতে কখনো কখনো যোগান বেড়ে গেলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হয় এবং কখনো কখনো সরবরাহ কমে যাওয়ায় জনগণ অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির স্বীকার হচ্ছে। এছাড়াতো অসৎ ব্যবসায়ীদের গুদামজাত করার প্রবণতা রয়েছেই । এইরূপ পরিস্থিতিতে সরকার কখনো সিন্ডিকেট কখনো ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করে থাকে। এতে পজেটিভ ইকোনমিক প্লেয়ার তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকা শক্তি ও সৎ ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে। এত কিছুর পরও আমরা একটি মার্কেট ডাটাবেইজ চালু করে ইন্টারনেটে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেইনি ।
মার্কেট ইন্টেলিজেন্স: মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের অনুপস্থিতিই আমাদের দেশের বাজার দরের উঠা নামার অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে বাজার অর্থনীতির ভিত যেখানে দুর্বল সেখানে বাজারকে সঠিকভাবে গাইড করা মার্কেট ইন্টিলিজেন্স ছাড়া অসম্ভব বৈ কি? এ বিষয়টি পাশে রেখে এখন অন্য বিষয়ে আসা যাক । আমাদের রফতানি বাস্কেট এখনো খুবই ছোট এবং এ ব্যাপারে স্বাধীনতার পর ইপিবি’র ভূমিকা অত্যন্ত অপ্রতুল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এ ব্যাপারে আবার মার্কেট ইন্টিলিজেন্সের কথা চলে আসে। আমাদের দেশের রফতানি কারকদের দক্ষতা বৃদ্ধি হয়নি। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের উঠানামা এবং আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের খবর তারা যথাসময়ে পান না। অনেকটা আন্দাজের উপরেই এক্সপোর্ট ব্যবহার উল্লেখযোগ্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। এখন প্রশ্ন হল চট্টগ্রামে বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সরকার কি চট্টগ্রামকে একটি ইকনোমিক হাব হিসেবে গড়ে তুলতে সমর্থ হবে? বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় চট্টগ্রামকে ইকোনমিক নিউক্লিয়াস হিসেবে গড়ে তোলাই যুক্তিযুক্ত।
পর্যটন শিল্পের বিকাশ: কারণ চট্টগ্রাম হিলট্র্যাক্টে আছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্য। কক্সবাজারকে একটি আন্তর্জাতিক মানের সী’রিসোর্ট নগরী ও বান্দরবানের নীলগিরি, বগা লেক, ধৰ্মীয় স্থাপনা ইত্যাদিকে কাজে লাগিয়ে একটি হিল রিসোর্ট শহর হিসেবে গড়ে তোলা খুব কঠিন ব্যাপার নয়, তবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্স গঠন করা না হলে এসব কখনো হবে বলে মনে হয় না।
মহাসমুদ্র বন্দর ও প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়ে: নিকট ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম বন্দর এবং প্রস্তাবিত মহাসমুদ্র বন্দর এবং সর্বোপরি আমাদের এশিয়ান হাইওয়ে মায়ানমার হয়ে সুদূর চীন পর্যন্ত দীর্ঘ হবে এইরূপ কল্পনা মাথায় রেখেই চট্টগ্রামকে একটি অর্থনৈতিক হাব হিসাবে গড়ে তোলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার ভিত্তিক কাজ বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে বর্তমান চট্টগ্রাম অবস্থায় ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এর কাজ পরিকল্পিত ভাবে দ্রুত হাতে নেয়া প্রয়োজন । চট্টগ্রাম বন্দরের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং-এ আরো ব্যাপক পরিকল্পনা দ্রুত নিলে দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। বর্তমানে জাহাজ জটের আমদানী কারণে রপ্তানীকারকরা প্রায়ই বিপাকে পড়েন।
শীপ বিল্ডিং শিল্প: শিল্পের দ্রুত বিকাশের জন্য পরিকল্পনা সরকারী সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন ।
কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং শিল্প: বাংলাদেশে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং এর প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে তথাপি এই শিল্পের বিকাশ পরিকল্পনাহীনভাবে এগুচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়। বন্দরের কার্যক্রমের বিকাশ ও ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে আমাদের লজিষ্টিক্স শিল্পের পরিকল্পিত বিকাশ খুবই জরুরী। বর্তমানে সম্প্রতি বাংলাদেশে শীপ বিল্ডিং যত্রতত্র যেখানেই জায়গা পাওয়া শিল্পের বিকাশ ঘটেছে এই শিল্প যাচ্ছে সেখানেই ব্যবসায়ীরা এই ব্যবসা স্থাপন করছেন। পতেঙ্গা দেশের জন্য অফুরন্ত সম্ভাবনার ও বন্দরের আশেপাশে G দ্বার খুলে দেবে। আন্তর্জাতিক চাহিদার কথা মনে রেখে এই শিতাকুণ্ড এবং বারবকুণ্ড এলাকায় মার্কেটিং এ নিয়োজিত হয়ে তারা প্রায় ক্ষেত্রেই লোকসান গোনেন। লাভ করতে গিয়ে তারা চিংড়ি মাছের মধ্যে পেরেক ইত্যাদি ঘটনা ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার হারান। এটা এখন সবাই জানে যে আমাদের এক্সপোর্ট মার্কেট খুবই সংকীর্ণ। রফতানি আয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করা না গেলে ১৯ কোটি মানুষের জন্য উন্নয়ন ও তাদের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়। শ্রম শক্তির সংকুচিত বাজার – এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য অদক্ষ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অটোমেইটেড সিস্টেমের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে। যাতে বিদেশী উদ্যোক্তারা আমাদের সস্তা ও দক্ষ শ্রমিকের আকর্ষণে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয়। দেশে বিদেশী শিল্প স্থাপিত হয় এবং বিদেশী শিল্পের মালিকেরা নিজ দেশে আমাদের দেশ থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শ্রমিক পাঠায়। বিদেশের বাজারে শ্রম ও জনশক্তি রপ্তানির জন্য এই কৌশল গ্রহণ করা খুবই জরুরী।
বিদেশী বিনিয়োগ সম্ভাবনা: চট্টগ্রাম সফর করেন। কেন প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, তাদের এই চট্টগ্রাম সফর? জানুয়ারী ২০১০ – এ আমাদের তাদের আলোচনা থেকেই প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়ে বোধগম্য হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের তার আমন্ত্রণে কনফেডারেশন উন্নয়ন ও এ অঞ্চলে একটি গভীর অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ সমুদ্র বন্দরের সম্ভাবনা তাদের (সি.আই.আই.)এর একটি উচ্চ মূল আকর্ষণ। তাছাড়া ভারতীয়রা পর্যায়ের বিনিয়োগকারী দল আলাপকালে জানিয়েছে যে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে। চট্টগ্রামে শিল্প স্থাপনে তাদের এটা বড় আশার কথা যে এর বিনিয়োগ ঘটলে উৎপাদিত পণ্য পরপর এপ্রিল মাসে মালয়েশিয়ান ভারতের সেভেন সিস্টারে চেম্বার (মাসা) এবং কোরিয়ান রফতানি করার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামে বিনিয়োগ তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্ত সম্ভাবনা যাচাই করার জন্য াবিত এশিয়ান হাইওয়ের সুযোগ এই শিল্পের প্রসার ঘটলে বন্দর এলাকায় ও চট্টগ্রামের প্রবেশমুখে তীব্র যানযট সৃষ্টি হবে এবং বন্দর নগরীতে অচলায়তন সৃষ্টি হবে, তাই আর কাল বিলম্ব না করে এই সম্ভাবনাময় ব্যবসার পরিকল্পিত প্রসারের জন্য একটি সুবিধামত স্থান নির্ধারণ করে এই ব্যাবসার জন্য অবকাঠামো তৈরী করা প্রয়োজন । তবে মনে রাখতে হবে এই স্থানটি এমন জায়গায় হতে হবে যেন কন্টোইনার বাহী ট্রেইলারগুলো দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সহজেই চলে যেতে পারে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য শিল্প বান্ধব অবকাঠামোর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা দরকার এবং জরুরী বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চকোরিয়ায় একটি কোল চার্জড্ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে। কারণ কয়লাবাহী ৮ মিটার পর্যন্ত ড্রাফটের জাহাজগুলো অনায়াশেই চকোরিয়া চ্যানেলে প্রবেশ করতে পারবে। এইরূপ কোল চার্জড্ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা সরকারের বিবেচনাধীন আছে বলে জানা গেছে। তবে তা চট্টগ্রাম বন্দরের আশে পাশে বা কে.ই.পি জেডের আশেপাশে স্থাপন করলে বন্দরের কনজেশন ও চট্টগ্রামের পলিউশন উভয়েই বৃদ্ধি পাবে । আইটি পার্ক : বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে যারা ভাবেন তারা
পলিসি ২০০৯ প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার এই শিল্পের বিকাশের একটি প্রাথমিক রূপরেখা প্রণয়ন করেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আইসিটি’র বিকাশের জন্য সবোচ্চ পর্যায়ে দুটি কমিটি আছে, এর মধ্যে একটি কমিটির কর্ণধার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। আইসিটি টাক্সফোর্স তাই আইটি শিল্পের বিকাশের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের দায়িত্বে আছেন। বাংলাদেশে আইটি শিল্পের বিকাশে সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা ক্ষুদ্র পরিসরে লেখা সম্ভব নয়, তবে দ্ব্যর্থহীনভাবে ভাষায় বলা যায় আইটি শিল্পের বিকাশের জন্য পাঁচটি বিষয় অত্যাবশ্যক।
১. আইটি বান্ধব মনোভাব।
২. এক্সেস টু ইন্টারনেট।
৩. আইটি দক্ষতা।
৪. সর্বস্তরে আইটি বিষয়ে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ।
৫. আইটি ভিলেজ বা আইটি পার্ক স্থাপন করা।
এর মধ্যে ১ থেকে ৪ নম্বর পর্যন্ত সবগুলো সামষ্টিক ও দীর্ঘমেয়াদী বিষয় তবে পঞ্চম বিষটি পাঁচ বছরের পরিকল্পনায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অতীতে ঢাকা শহরে একটি আইটি পার্ক এবং ঢাকার অদূরে একটি আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে দু’টির কোনটিই স্থাপিত হয়নি। চট্টগ্রাম বাসির দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় দুটি ও চট্টগ্রামে দৃষ্টি এ ব্যাপারে আকর্ষণ করছি।
চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিক মানের শহর হিসেবে গড়ে তোলা:
একটি ইকোনমিক হাব গড়ে তোলা মুখের কথা নয়। বা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করাও সহজ নয় । চট্টগ্রামকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে সর্বপ্রথম চট্টগ্রামকে আন্তর্জাতিক মানের শহর হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। বিনিয়োগকারীদের এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা, শিক্ষা, ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল রেস্তোরাঁ নিশ্চিত না করলে বিনিয়োগকারীরা আসবে না। চট্টগ্রামে আর একটি আন্তর্জাতিক মানের সেভেন স্টার হোটেল প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সরকারী পর্যায়ে চলছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ :
খুশির কথা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে আলাপকালে জানা গেছে যে ভারতের এপোলো হসপিটাল চট্টগ্রামে একটি হসপিটাল এবং আর একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ ( দিল্লি পাবলিক স্কুল ) চট্টগ্রামে একটি আন্ত র্জাতিক স্কুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টিকে টপ প্রায়োরিটি কার্যক্রম হিসেবে পরিগণনায় এনে দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েরগণ নাম দুটি
সকলেই অবগত আছেন যে বাংলাদেশে আইটি একটি আইটি পার্ক স্থাপন করবেন । আসার কথা প্রতিষ্ঠানকে ইতিমধ্যেই অনন্যা আবাসিক শিল্পের প্রসারের সম্ভাবনা উজ্জল। আইসিটি শিল্পের সাথে যারা জড়িত বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও আইটি গবেষণার সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান সমূহ এ ব্যপারে প্রচুর লেখারেখি করেছেন । বাংলাদেশে আইটি শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা সরকারী স্বীকৃতি পায় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণায়। আইসিটি হল আইটি পার্ক বা ভিলেজ যেহেতু একটি ছোট জোন সেহেতু আইটিপার্কের অবকাঠামো তৈরী করা ও বাস্তাবায়ন করা সহজ। তিনটি আইটি পার্ক বা ভিলেজ স্থাপন করার মত সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আইটি আইসিটি প্রশিক্ষিত জনবল রয়েছে। টাস্কফোর্সের সচিব এবং মুখ্যসচীব মহোদয়ের এলাকায় জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে আমি আরো জেনেছি যে, আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে শর্তসাপেক্ষে উভয় প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এই শর্ত অনুযায়ী এ্যাপলো হাসপাতালকে ৩ বছরের মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সনদায়নের মাধ্যমে হাসপাতালটি চালু করতে হবে এবং দিল্লী পাবলিক স্কুলকে ২ বছরের মধ্যেই তাদের আস্ত জাতিক স্কুলটি চট্টগ্রামে স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া ইন্টারন্যাশনাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি তার কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু করেছে।
চট্টগ্রামের কেএফসির আউটলেট কাজ শুরু হয়েছে। কেএফসি’র উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে তারা অতি শীগ্রই কেএফসি’র দ্বিতীয় আউটলেট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া কক্সবাজারে আরো একটি কেএফসির’র আউটলেট খোলা হচ্ছে। অতি সম্প্রতি চট্টগ্রামে আগোরা, তার আউটলেট খুলেছে এবং এই সমস্থ উন্নয়ন অবশ্যই চট্টগ্রাম বাসীর জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি করবে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের চট্টগ্রামে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। তবে অস্বীকার করার উপায় নাই যে এসমস্ত উদ্যোগ বিচ্ছিন্ন ভাবে ঘটছে। তাই বেসরকারী উদ্যোক্তাদের উচিত হবে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের পিৎজা হাট, ম্যাকডোনাল্ড’স, সেভেন ইলেভেন সহ আরো অনেক ফুডচেইন এর আউটলেট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা। চট্টগ্রামকে সত্যিকার অর্থে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে সাজিয়ে তুলতে হবে। এই ধারায় আরো অনেক আন্তর্জাতিক মানের লন্ড্রী, জিম, থিম পার্ক, এন্টারটেইনমেন্ট কেন্দ্র, রিসোর্ট ও অন্যান্য ইউটিলিটি নিশ্চিত করা না গেলে আন্তর্জাতিক পুঁজি আকর্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের ধনী ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে।
চেম্বারের ভূমিকা: চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সহ ব্যবসায়ীদের অন্যান্য সংগঠনের এব্যাপারে ভূমিকা অপরিসীম। আশা করা যায় চট্টগ্রামের এ দু’টি চেম্বার এ ব্যাপারে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেই চট্টগ্রামকে একটি ইকোনমিক হাবে রূপান্তরিত করার কৌশল রচনা করবেন। চট্টগ্রামের দুটি চেম্বারের উচিত হবে আন্তর্জাতিক যাগাযোগ বৃদ্ধির জন্য চেম্বারের পরিচালক পর্যায়ে আন্ত জাতিক যোগাযোগ সেল স্থাপন করা ও বিদেশী উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা। উল্লেখ্য চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রকল্পটি যত শীঘ্রই সম্ভব চালু করা গেলে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে তা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। চট্টগ্রামের দু’টি চেম্বারের নেতৃবৃন্দের প্রতি আমার সবিনয় অনুরোধ থাকবে পরস্পরের প্রতি সহযোগীতা নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসা বান্ধব নীতি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের উপর চাপ বৃদ্ধি করা। এই উদ্দেশ্যে উভয় চেম্বার রিচার্স এন্ড পলিসি উইং প্রতিষ্ঠা না করলে তারা আন্তর্জাতিক মানের চেম্বারের মর্যাদায় সমাসীন হতে পারবেন না।